দ্বিতীয় অধ্যায় : পদার্থের অবস্থা, নবম ও দশম শ্রেণির রসায়ন

Shimul Hossain
0
প্রশ্ন-১। ব্যাপন ও নিঃসরণ হার কীসের উপর নির্ভরশীল?
উত্তরঃ ব্যাপন ও নিঃসরণ হার বস্তুর ভর এবং ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন-২। গলনাংক কাকে বলে?
উত্তরঃ যে তাপমাত্রায় কোন কঠিন বস্তু গলতে শুরু করে তাকে ঐ বস্তুর গলনাংক বলে।

প্রশ্ন-৩। পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যার ভর আছে, জায়গা দখল করে ও জড়তা আছে- অর্থাৎ বল প্রয়োগে বাধার সৃষ্টি করে তাকে পদার্থ বলে।

প্রশ্ন-৪। পদার্থ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ পদার্থকে ভৌত অবস্থার উপর ভিত্তি করে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১। কঠিন, ২। তরল এবং ৩। বায়বীয় পদার্থ।

প্রশ্ন-৫। কঠিন পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার এবং আয়তন আছে তাকে কঠিন পদার্থ বলে। কঠিন পদার্থে কণা বা অণুগুলোর আন্তঃআণবিক শক্তি খুব বেশি থাকে এবং আন্তঃআণবিক দূরত্বও অপেক্ষাকৃত অন্য দুই অবস্থার থেকে অনেক কম।

প্রশ্ন-৬। বায়বীয় পদার্থ কাকে বলে?
উত্তরঃ বায়বীয় বা গ্যাসীয় পদার্থে আন্তঃআণবিক শক্তি প্রায় থাকে না বললেই চলে। থাকলেও তা খুবই দূর্বল। তাই এর অণুগুলো প্রায় স্বাধীন ভাবে এবং দ্রুত নড়াচড়া করতে পারে। এজন্য বায়বীয় পদার্থের নির্দিষ্ট আকার তো নেইই, সেইসাথে এর কোন নির্দিষ্ট আয়তনও থাকে না। যে পাত্রেই রাখা হোক না কেন, সেই পাত্রেরই পুরো আয়তন জুড়ে বিরাজ করে। সুতরাং বলা যায় যে-
যে ভৌত অবস্থায় কোন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন থাকে না তাকেই বায়বীয় পদার্থ বলে। যেমনঃ অক্সিজেন, নাইট্রোজেন বা কার্বন-ডাই- অক্সাইড ইত্যাদি।

প্রশ্ন-৭। CNG কী?
উত্তরঃ CNG হলো অধিক চাপে সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (Compressed Natural Gas) যেটি যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন-৭। ঊর্ধ্বপাতন কী?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে তা সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয় এবং ঠান্ডা করলে সরাসরি কঠিন রূপান্তরিত হয়, তাকে ঊর্ধ্বপাতন বলে।

প্রশ্ন-৮। পদার্থের বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তরঃ পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
ক. পদার্থের ভর ও আয়তন আছে।
খ. তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
গ. পদার্থের প্রতিটি কণা আন্তঃআণবিক শক্তি দ্বারা একে অপরকে আকর্ষণ করে।
ঘ. বল প্রয়োগে পদার্থ বাধা দেয়।

প্রশ্ন-৯। কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের ওপর সমান চাপ দিলে কী ঘটে?
উত্তরঃ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের ওপর সমান চাপ দিলে দেখা যায় কঠিন পদার্থের অণুগুলো ঘনিষ্ঠভাবে অবস্থান করায় এর আয়তনের কোনো পরিবর্তন হয় না। তরল পদার্থের অণুগুলোর আন্তঃআণবিক দূরত্ব হ্রাস পেতে থাকে। ফলে তরলের অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে কঠিনরূপ ধারণ করতে পারে। অন্যদিকে, গ্যাসীয় পদার্থের বিচ্ছিন্ন অণুগুলো পরস্পরের সন্নিকটে আসে। পর্যায়ক্রমে এটি তরল এবং অবশেষে কঠিন অবস্থাপ্রাপ্ত হয়।

প্রশ্ন-১০। হাইড্রোজেনের আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল খুবই কম - ব্যাখ্যা।
উত্তরঃ হাইড্রোজেন গ্যাসীয় পদার্থ। গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক দূরত্ব এতই বেশি হয় যে, এদের মধ্যে কোনো আকর্ষণ নেই বললেই চলে। তাই গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলোর গতিবেগ খুব বেশি। এজন্য অণুগুলো ছড়িয়ে পড়ে এবং সবসময় তীব্রবেগে এদিক ওদিক ইচ্ছামতো ছোটাছুটি করে বেড়ায়। অতএব, হাইড্রোজেনেরও আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল খুবই কম।

প্রশ্ন-১১। নিঃসরণ ও ব্যাপনের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাব কীরূপ?
উত্তরঃ নিঃসরণের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাব বেশি। বাহ্যিক উচ্চ চাপের প্রভাবে পাত্রের সরু ছিদ্র পথ দিয়ে গ্যাস সজোরে বের হয়। একে নিঃসরণ বলে। বাহ্যিক চাপ ছাড়াও ছিদ্র পথ দিয়ে গ্যাস বের হতে পারে। তখন তাকে ব্যাপন বলা হয়। এজন্য ব্যাপনের ক্ষেত্রে বাহ্যিক চাপের প্রয়োজন নেই। তাই বলা যায়, নিঃসরণের ক্ষেত্রে চাপের প্রভাব বেশি।

প্রশ্ন-১২। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে গ্যাসের চাপের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ পাত্রে আবদ্ধ গ্যাস পাত্রের দেয়ালে যে চাপ দেয় তাকে গ্যাসের চাপ বলা হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে গ্যাসের অণুসমূহের গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে পাত্রের দেয়ালে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন-১৩। বিভিন্ন অবস্থায় পদার্থের সংকোচনশীলতা ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ শক্তিশালী আকর্ষণ বলের কারণে কঠিন অবস্থায় অণুসমূহ দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। ফলে এ অবস্থায় পদার্থের সংকোচনশীলতা নেই বললেই চলে। চাপে তরল পদার্থ স্বল্পমাত্রায় সংকোচনশীল এবং বায়বীয় পদার্থ অধিকমাত্রায় সংকোচনশীল।

প্রশ্ন-১৪। গতিশক্তির সাথে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে অণুসমূহের গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে পদার্থটি কঠিন থেকে তরলে পরিণত হয়। তরলকে আরও তাপ দিলে গতিশক্তি আরও বৃদ্ধি পেয়ে গ্যাসীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-১৫। পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি ও গতিশক্তি পরস্পর বিপরীতধর্মী ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি ও গতিশক্তি পরস্পর বিপরীতধর্মী। কোনো পদার্থে তাপ প্রয়োগ করা হলে এর আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি হ্রাস পায় এবং কণাগুলোর ছুটোছুটি বাড়তে থাকে অর্থাৎ এদের গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন-১৬। হাইড্রোজেনের তুলনায় কার্বন ডাইঅক্সাইডের ব্যাপন সময় বেশি কেন?
উত্তরঃ ব্যাপন বস্তুর ভর ও ঘনত্বের ওপর নির্ভরশীল। বস্তুর ভর বেশি হলে ব্যাপন হার কম অর্থাৎ ব্যাপনের সময় বেশি হবে।
হাইড্রোজেনের (H2) আণবিক ভর H2 = 1 x 2 = 2। কার্বন ডাইঅক্সাইডের (CO2) আণবিক ভর = 12 + 16 x 2 = 44।
সুতরাং হাইড্রোজেনের তুলনায় কার্বন ডাই অক্সাইডের ভর বেশি হওয়ায় এর ব্যাপন হার কম অর্থাৎ ব্যাপন সময় বেশি লাগবে।

নিম্ন স্থিরাঙ্ক ও উর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক বলতে কী বোঝ?

উত্তর : নিম্ন স্থিরাঙ্ক : স্বাভাবিক চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ গলে পানিতে পরিণত হয়, সেই তাপমাত্রাকে নিম্ন স্থিরাঙ্ক বলে।

ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক : স্বাভাবিক চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানি ফুটে বাষ্পে পরিণত হয়, সেই তাপমাত্রাকে ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক বলে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)